জেলা প্রতিনিধি,সিরাজগঞ্জ:
চুক্তিনামা অনুযায়ী মাসিক ৩ হাজার টাকায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছে। চুক্তিনামা অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া কক্ষগুলোতে গড়ে তোলা হয়েছে পোশাক কারখানা। এতে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ চরমভাবে বিনষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।
জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে উপজেলার নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর টিনসেড আধা-পাকা বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষ স্থানীয় আব্দুর রহমানকে মাসিক হিসেবে ভাড়া দেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। তিনশ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে করা হয় বিদ্যালয়ের ঘর-ভাড়ার চুক্তিনামা।
চুক্তিনামায় দেখা যায়, আব্দুর রহমান বাবলু নামের এক ব্যক্তি টেইলারিং ব্যবসা করার জন্য ৬ হাজার টাকা জামানতের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের তিনটি ঘর ভাড়া নেন। আর মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা। ভাড়ার টাকা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অনুকুলে বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ভাড়া নেওয়া কক্ষগুলোতে সেলাই মেশিন বসিয়ে কিছু জনবল নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি করছেন ক্রয়-বিক্রয় করছে ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমান বাবলু।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফ্যাক্টরি থাকায় পড়াশোনার চরম ক্ষতি হচ্ছে। ফ্যাক্টরির মধ্যে মেশিনের শব্দের পাশাপাশি শ্রমিকদের কথা বলার শব্দে এখানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় রিপন খান ও আব্দুর রশিদ নামের দুইজন বলেন, বিদ্যালয়ের কক্ষে গার্মেন্টস স্থাপন করা হয়েছে। এখানে আমার নিজ পরিবারের ৪জন ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা করে। কিন্তু গার্মেন্টসে সব সময় লোকজন চলাচল করে থাকে। এ কারণে সঠিকভাবে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করা সম্ভব নয়।
নান্দিনা মধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের ৩টি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছিলো। ইতোমধ্যে আমি মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে, অতিদ্রুত পোশাক কারখানাটি সরিয়ে নিতে।
বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ ভাড়া নেওয়া আব্দুর রহমান বাবলু বলেন, ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর মাসে আমি ঘরগুলো ভাড়া নিয়েছি। ঈদে আগে একটু বেশি অর্ডার পাচ্ছি। তাই কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে অভিযোগ দিচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুল হাসান লাভলু বলেন, সরকারি নীতিমালা মেনেই পরিত্যক্ত ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সবার অনুমতি নিয়েই এই ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এতে যদি কারো সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে তারা ম্যানেজিং কমিটিকে অবগত করে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছাকমান আলী জানান, বিদ্যালয়ের ঘর-ভাড়ার বিষয়টি আমি শোনার পর প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, ম্যানেজিং কমিটির সবার অনুমতিতে পরিত্যক্ত ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তবে এর কারণে যদি শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয় তাহলে কেউ অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচএমএ/এসবাংলা