জেলা প্রতিনিধি,সিরাজগঞ্জ:
যৌতুক দাবির অভিযোগে সিরাজগঞ্জে স্ত্রী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে চীপ জুডিশিয়াল এনায়েতপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন শিক্ষক ইব্রাহিম হোসেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারী করেছেন আদালতের বিচারক কে.এম শাহরিয়ার শহীদ বাপ্পী।
মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২৮ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। এর আগে গত বুধবার (৬ এপ্রিল) এই মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী স্বামী ইব্রাহিম হোসেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষে শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নেন এনায়েতপুরের ইব্রাহিম হোসেন। দুই বছর আগে তিনি ফরিদা খাতুনের সাথে শরিয়ত মোতাবেক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে স্বামীর ওপর ফরিদা নানা ভাবে হয়রানি ও চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। একই সাথে ইব্রাহিমের বৃদ্ধ বাবা-মাকে ছেড়ে নতুন বাসায় উঠতে ও তার বেতনের সকল টাকা নিজের কাছে রাখতে প্রতিনিয়তই সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করতেন ফরিদা। এই সকল অত্যাচার মানতে ইব্রাহিত অস্বীকার করলে প্রায় ৮ মাস আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে চলে যান ওই অত্যাচারী স্ত্রী ফরিদা।
সম্প্রতি স্বামীকে শ্বশুর বাড়িতে ডেকে দেনমোহর ছাড়াও আরো বাড়তি পাঁচ লাখ টাকা দাবী করেন ওই পরিবার। সেই সাথে টাকা না পেলে নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে হয়রানী করাসহ সংসার না করার হুমকি দেন ইব্রাহিমের স্ত্রী ফরিদা। অবশেষে নিরুপায় হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন ইব্রাহিম।
আইন অনুযায়ী এই যৌতুক বিরোধী আইনে উভয়পক্ষেরই মামলা করার অধিকার রয়েছে বলে জানালেন ইব্রাহিম হোসেনের মামলার এ্যাডভোকেট নিখিল কুমার ঘোষ।
অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর এস. এম দ্বীন আমিন জানান, অধিকাংশ যৌতুক মামলায় পুরুষেরা হয়রানির শিকার হন। এই মামলার মাধ্যমে শুধু নারীরাই নয়, পুরুষের সাথে অন্যায় হলে তার প্রতিকার পাবেন ভুক্তভোগীরা।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুল রউফ পান্না বলেন, যেকোনো পক্ষেরই যৌতুক দাবী করা অন্যায়। তবে এই মামলাটির মাধ্যমে সবাই আইনের এই ব্যাখ্যাটি নতুন করে জানবে। ২০১৮ সালের যৌতুক আইনের ৩ এর ধারা অনুযায়ী, বিবাহের নিকাহনামা বাদে যেকোনো পক্ষ বাড়তি টাকা দাবি করলে অপর পক্ষ তার প্রতিকারে আইনের দ্বারস্থ হতে পারবে বলে তিনি জানান।