নিজস্ব প্রতিবেদক,সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের ১৫০ নং রহিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৬ এপ্রিল) সকালে প্রধান শিক্ষক মাফরুহা খান গাছ কেটে বিক্রি করতে চাইলে বাধা দেন এলাকাবাসী। এখন এই গাছ বিদ্যালয়ের মাঠেই নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
স্থানীয় রাজু আহম্মেদ, নুরীসলাম, পারভেজ, জিন্নাহ, মোতাবেলসহ বেশ কয়েকজন জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাফরুহা খান কোন অনুমতি না নিয়ে বিদ্যালয়ের ১টি বড় মেহগনি গাছ বিক্রির জন্য কর্তন করার উদ্যোগ নেয়। গাছের আনুমানিক মূল্য ২০ হাজার টাকা। গাছ কর্তনের সময় এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের উদ্দেশ্য টের পেয়ে তা বিক্রি ও গাচ কর্তনে বাধা প্রদান করেন। এলাকাবাসীর বাধার মুখে প্রধান শিক্ষক গাছ বিক্রি করতে ব্যর্থ হন। এখন অর্ধেক কর্তনকৃত গাছটি বিদ্যালয়ের মাঠেই নষ্ট হচ্ছে।
রহিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মরিয়ম পিতা মাসুদ রানা, ইয়াসিন পিতা হযরত আলী, আরিফুল ইসলাম পিতা এহসান আলীসহ ৭/৮ জন অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয়ের গাছ কোনোভাবেই ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিল না। প্রধান শিক্ষক বন বিভাগের অনুমতি না নিয়েই অযথা গাছটি কেটে গোপনে বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এটি জানা জানি হলে এলাকাবাসী ফুঁসে ওঠেন। এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে প্রধান শিক্ষক গাছটি বিক্রি করতে পারেননি। এখন নিজে বাঁচতে গাছ বিদ্যালয়ের জানলা-দরজার কাজে ব্যবহার করা হবে বলে প্রচার করছেন।
প্রধান শিক্ষক মাফরুহা খান বন বিভাগের অনুমোদন না নিয়েই গাছ কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, এ গাছটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও চলাচলের সমস্যা হচ্ছিল। তাই তাদের খেলার মাঠ ঠিক রাখতে গাছ কাটার উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে। গাছ বিক্রির টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। স্থানীয়রা গাছ বিক্রিতে বাধা দেয়। তাই গাছটি কেটে বিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আপেল মাহমুদ বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাছ কেটে বিক্রি করছে বলে এলাকাবাসির কাছ থেকে খবর পেয়েছি। তিনি আমাকে কিংবা কাউকেই এ বিষয়ে অবহিত করেন নি। তবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাবনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাশ্যপী বিকাশ চন্দ্র বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু রহিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের গাছ কাটতে কোনো অনুমতি নেননি। অনুমতি না নিয়ে গাছ কাটার উদ্যোগ নিলে প্রধান শিক্ষক আইন ভঙ্গ করেছেন। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে বন বিভাগ তদন্ত কমিটি গঠন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।