॥ নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ ॥
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মহিলা কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রফিকুল ইসলাম তাড়াশ পৌর এলাকার ভাদাস গ্রামে মৃত গগন সরকারের ছেলে।
রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে মো. আল তোহিদ নামে একজন ব্যক্তি জনস্বার্থে এমন অভিযোগ করে তার প্রতিকার ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি তুলেছেন।
রফিকুল ইসলাম অনেক ধরপাকড় করে কয়েকদিন আগে সদ্য প্রকাশিত দৈনিক আজকের পত্রিকাতে তাড়াশ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে সাময়িক নিয়োগ পেয়েছে। এর আগে দৈনিক বিজনেজ বাংলাদেশ পত্রিকা ও এসটিভি বাংলাতে তাড়াশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম নামের ঐ তাড়াশ মহিলা কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক দেড় যুগেরও অধিক সময়কাল ধরে সাংবাদিকতা পূঁজি করে হীন অপকর্ম নাই যা তিনি করেননি।
তার বিরুদ্ধে ০৪/০২/২০১৮ তারিখে মো. মোকছেদ আলী নামে এক অসহায় কৃষক তাড়াশ থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, জোরপূর্বক তার জমির দখল নেওয়ার জন্য তাড়াশ প্রেসক্লাবের ভেতর তাকে ডেকে এনে মারপিট করে হাত ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। সেই মামলার তদন্ত শেষে চার্জশীট দেন থানা পুলিশ। যার মামলা নং ৩১১।
এরপর ২৭/০১/২০১৯ তারিখে মো. আব্দুল হালিম নামে একজন ক্ষুদ্র বেকারি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন ও নগদে নয় হাজার টাকা নিয়ে আসেন। সেই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ করেন। সেসব নিয়ে তখন বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসবের জের ধরে ও তার ভয়ে শেষ পর্যন্ত ভুক্তভোগী আব্দুল হালিম দম্পত্তি তার বেকারি কারখানা বন্ধ করে তাড়াশ থেকে চলে যান। এখনো ফিরে আসেননি।
তারপর গত ০১/১২/২০১৯ তারিখে তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ি গ্রামের গোলাম মোস্তফা নামের একজন সন্মানী ব্যক্তির উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। কিন্তু এই সাংবাদিক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জোর অপচেষ্টা চালান। তখন তিনি তার ফেসবুক আইডি Rafiq Journalist থেকে ঐ সন্মানী ব্যক্তির নামে ভয়ানক মিথ্যাচার শুরু করেন ও তা কয়েকটি নাম সর্বস্ব অনলাইন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে ভাইরাল করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে যান। সেই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী তাড়াশ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন। সেই মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেন থানা পুলিশ। মামলা নং ১৫৭/১৯।
এদিকে সাংবাদিকের মিথ্যাচারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনাল কোর্টে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী গোলাম মোস্তফা। সেই মামলার সিআইডির ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী তাড়াশ থানা পুলিশ গোপন ও প্রকাশ্যে তদন্ত করেন। তদন্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৯ (১) (২) ধারার অপরাধ সত্য বলে প্রতিয়মান হয়। তারপর ২১/০২/২০২১ তারিখে আদালতে চার্জশীট জমা দেন থানা পুলিশ। এখন মামলাটি রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল কোর্টে বিচারাধীন। চলমান মামলা নং ২৯২/২০২১।
সর্বপরি নারী কেলেঙ্কারি নিয়েও সমাজে তার চরম বদনাম রয়েছে। তিনি সর্ব মহলে অতি নিন্দিত হওয়ায় অদ্যাবদি ভালো কোন সংবাদ মাধ্যমে সুযোগ পাননি। সাংবাদিকতা চর্চার অপরাধে তিনি প্রেসক্লাব ও রিপোর্টাস ইউনিটি, কোথাও সদস্যপদ ধরে রাখতে পারেননি। সব সংগঠন থেকেই তার অপকর্মের দায়ে বহিষ্কার হয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, অপ সাংবাদিকতার দাপটে বছরে একদিনও কলেজ করে না। মাস শেষে কলেজ যেয়ে এক মাসের স্বাক্ষর করে দেন হাজিরা খাতায়। তিনি বেশিরভাগ দিন সকাল সারে আটটায় বাড়ির বাইর হন। তারপর সারাদিন খবরের পেছনে না ছুটে বরং রীতিমতো চাঁদাবাজি ও ধান্দাবাজি করে বেড়ান। অপ মৃত্যু, বাল্যবিবাহসহ বিপদগ্রস্থ মানুষকে জিম্মি করে টাকা নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে তার।
তাড়াশ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাফর ইকবাল জানান, সে আমাদের কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক। নামে নানা অপর্কমের কথা শুনেছি। কিন্তু আমাদের কাছে লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে কলেজের নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট, একটি মহল আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই অভিযোগগুলো বিভিন্ন দপ্তরে দিয়েছে।