নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিরাজগঞ্জে সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের পার পাঁচিল গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয়ে মোছা. তানিয়া খাতুন (১৮) নামের এক নারী ৭ মাসের অন্তসত্তা হয়েছে।
পেটের সন্তানের পিতার পরিচয়ের দাবীতে দারে দারে ঘুরছে অসহায় তানিয়া। তার প্রশ্ন আমি এখন কী করব, আমি কি আমার সন্তানের বাবার পরিচয় দিতে পারবো না। আমি কি কোন বিচার পাবোনা।
মাতবরদের পিছে ঘুরতে ঘুরতে আমি এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এঘটনায় আমি বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছি।
মামলার আসামীরা হলেন, ছোনগাছা ইউনিয়নের পার পাঁচিল গ্রামের মো. শামীম হোসেনের পুত্র মো. সোহাগ (২০) ও তার মা রেজিয়া বেগম (৫০)।
৭ মাসের অন্তঃসত্তা তানিয়া বলেন, আমাকে নানাভাবে ফুসলিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাতে আমাদের বাড়ীতে প্রায়ই আসতো। পরে আমি অন্তঃসত্তা হই। অন্তঃসত্তার বিষয়টি আমার পরিবারের লোকজন সহজেই বুঝতে পারে। পরে কোনো কুল-কিনারা না পেয়ে সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে প্রায় ২৬ দিন পর আমি সোহাগের বাড়ীতে গিয়ে উঠি। কিন্তু আমাকে মারপিট করে বাড়িতে উঠতে না দিয়ে বের করে দেয়। পরে থানায় গিয়ে সোহাগ ও ধর্ষণে সহায়তাকারী রেজিয়া বেগমকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করি।
তানিয়ার পিতা কৃষক মো. আব্দুল কাদের অভিযোগ বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তার সর্বনাশ করেছে। এঘটনায় বিচার না পেয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছি। এখন সোহাগের বাড়ীর লোকজন আমাদের গ্রামের আজম মন্ডল, আল মাহমুদকে দিয়ে নানা ধরণের হুমকি-থামকি দিচ্ছে। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে বিপদে আছি।
সোহাগের মা রেজিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এই ঘটনার সাথে আমার ছেলে জড়িত নয়।
মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. ফারুক আহমেদ বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। পুলিশ প্রতিটি বিষয় তদন্ত করছে। আমরা চাইবো, যাতে তানিয়া সুষ্ঠু ন্যায় বিচার পায় এবং তার সন্তানের পিতৃ পরিচয় পায়।
জামিনে মুক্ত হওয়ার পর অসহায় নারী মোছা. তানিয়া খাতুনের পরিবারের ওপর বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে তানিয়ার বাবা মো. আ. কাদের।
উল্লেখ্য: গত ৩ জুলাই ২০২০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন ৮/০৩ এর ৯ (১)/৩০ ধারায় সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ধর্ষণকারী মো. সোহাগ ধর্ষণের পরে গ্রেফতার হলেও গত (২৫ আগষ্ট) হাই কোর্ট ডিবিশনে এক বছরের জন্য জামিন নিয়ে মুক্ত হয়।