নিজস্ব প্রতিবেদক :
পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ
ও কাজিপুরে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘন্টায় ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে কাজিপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬
সেন্টিমিটার ও সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ট পয়েন্ট এলাকায় বিপদসীমার ৬
সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার (২ অক্টোবর) সকালে
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগী প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম
পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চত করেন।
যমুনার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী,
শাহজাদপুর ও তাড়াশ উপজেলার নি¤œ এলাকা এবং বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল তলিয়ে গেছে।
সেই সাথে ডুবে গেছে ফসল, ঘর-বাড়ি ও গ্রামীন সড়ক। এতে চরম দুর্ভোগের
মধ্যে রয়েছেন বন্যা কবলিত মানুষ।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুনের প্রথম
থেকেই যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুর পয়েন্টে বাড়তে শুরু করে। গত
২৮ জুন উভয় পয়েন্টেই বিপদসীমা অতিক্রম করে। এরপর ৪ জুলাই থেকে আবার কমতে
শুরু করে এবং ৬ জুলাই বিপদসীমার নিচে নেমে যায় যমুনার পানি। ৯ জুলাইয়ের
পর ফের বাড়তে থাকে এবং ১৩ জুলাই দ্বিতীয় দফায় বিপদসীমা অতিক্রম করে
কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে।
টানা ২৫ দিন দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হওয়ার পর ৭ আগস্ট যমুনার পানি উভয়
পয়েন্টেই বিপদসীমার নিচে নেমে যায়। এর মধ্যে কয়েক দফায় যমুনার পানি কমতে
ও বাড়তে থাকলেও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কাজিপুর
পয়েন্টে আবার বিপদসীমা অতিক্রম করেছে যমুনার পানি। এরপর থেকে যমুনার পানি
দু’টি পয়েন্টেই হ্রাস-বৃদ্ধি হতে থাকে। ১ অক্টোবর কাজিপুর পয়েন্টে ও (২
অক্টোবর) আবার বিপদসীমা অতিক্রম করলো।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মেছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ জানান, পানি
বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আমার ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডের মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি
ঢুকে পড়েছে। তাদের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা চেয়ে তালিকা পাঠানোর
প্রস্তুতি চলছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম
বলেন, টানা বর্ষণের কারণে যমুনায় পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কাজিপুর
পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে
পানি বৃদ্ধিতে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। বৃষ্টিপাতের কারণেই যমুনাসহ
অভ্যন্তরীণ নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পানি
স্থিতিশীল হতে পারে বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, চলতি
বন্যায় জেলার ৬টি উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষদের মাঝে কাজিপুর-৪৫০,
বেলকুচি-২৫০, তাড়াশ-২৫০, সদর-২৫০, শাহজাদপুর-৩০০ ও চৌহালী-১৭০০ শুকনো
খাবার প্যাকেট দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারী বরাদ্দের
ত্রাণ ও নগদ টাকা মজুদ রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ত্রাণ ও টাকা বিতরণ করা
হবে।