Header Border

ঢাকা, বুধবার, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ ইং | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল) ২৮.৯৬°সে

সিরাজগঞ্জে যমুনা ব্যাপক ভাঙ্গন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

মৌসুমী বায়ূর প্রভাবে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি
পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এর ফলে
নি¤œাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিদিনই নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে বসত-ভিটা, ফসলী জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয়রা নদী ভাঙ্গন আতংকে রয়েছেন।

হুমকীর মুখে রয়েছে এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাঁজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ
হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রসা, স্কুল সহ বহু স্থাপনা। ভাঙ্গনের হাত থেকে
রক্ষা পেতে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ বসত-বাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে
নিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ও অন্যের বাড়িতে আশ্রয়
নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য
এনায়েতপুরে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য ৬শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে
নিয়েছেন। প্রকল্প বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

স্থানীয়রা জানায়, চলতি বছরে চার দফা বন্যার পর যমুনা নদীতে পানি কমতে
শুরু করে। হঠাৎ করে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে যমুনায় পানি বৃদ্ধি
পেতে  শুরু করে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এনায়েতপুরে শুরু হয় ব্যাপক নদী
ভাঙ্গন। গত দুই দিনে শতাধিক বসতবাড়ি, ফসলী জমি, মসজিদ, মাদ্রসা নদী গর্ভে
বিলী হয়ে যায়। অনেকে কিছুই সরাতে পারেনি। মুহুর্তের মধ্যে নদীতে ধসে পড়ে
তাদের বসতবাড়ি।

অব্যাহত ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পড়েছে এনায়েতপুরের ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার
ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে চৌহালী উপজেলাধীন দেশের
সর্ববৃহৎ এনায়েতপুর কাপড়ের হাট, খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড
হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সি ইন্সটিটিউট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বহু
তাঁত কারখানাসহ হাট বাজার যমুনার অদূরে রয়েছে। আতংকে দিন কাটাচ্ছে যমুনা
পারের মানুষ। সহায় সম্বল হারিয়ে নি:শ্ব এসব মানুষ এখন মানবেতর জীবন যাপন
করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্য
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবীতে অনশন পালন করেন স্থানীয়
দুই বৃদ্ধ। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌছে দ্রুত
বাঁধ নির্মানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই বৃদ্ধের অনশন ভঙ্গ করান।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সদস্য ও পাকুরতলা গ্রামের
বাসিন্দা কামরুজ্জামান বলেন, গত কয়েকদিনে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনা
নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধির সময় ভাঙন ঠেকাতে জরুরি কিছু কাজ
করা হলেও স্থায়ী কাজের অভাবে এখন হুমকির মুখে পড়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল
এলাকা। দ্রুত কাজ করা না হলে অস্তিত্ব বিলীন হবে বৃহত্তম একটি জনপদের।

স্থানীয় ইয়াসিন প্রামানিক বলেন, ৮০ বছরের জিন্দিগিতে ৭ বার নদী ভাঙ্গনের
কবলে পড়েছি। ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। ভাঙ্গরোধে স্থায়ী
বাঁধ চাই। বাঁধ নির্মানের দাবীতে অনশনে বসেছিলাম। পানি উন্নয়নের
কর্মকর্তারা বাঁধ নির্মানের আশ্বাস দিয়ে অনশন ভঙ্গ করান। মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী কাছে আবেদন জানাই নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে এনায়েতপুরকে
রক্ষার করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন,
কাজীপুরের পাটাগ্রাম এবং এনায়েতপুরের ব্রাক্ষণগ্রাম থেকে কৈজুড়ী পর্যন্ত
১২ কিলোমিটার এলাকা অরক্ষিত। এই দুটি স্থানে ভাঙ্গন রয়েছে। ভাঙ্গন রোধে
সাড়ে ১১শ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের
অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করছি শুস্ক মৌসুমে স্থায়ী কাজ শুরু করতে পারবো।

SHARE

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

আপত্তিকর অবস্থায় উল্লাপাড়ার কাউন্সিলর আজাদ আটক, গণপিটুনীতে হাসপাতালে ভর্তি
সিরাজগঞ্জে ১৬ হাজার পিচ ইয়াবাসহ আটক ৪
সিরাজগঞ্জ-২ আসনে আ’লীগের মনোনয়ন উত্তোলন করলেন আল মাহমুদ সরকার তারেক
সিরাজগঞ্জে কলেজ অধ্যক্ষকে অপহরণের অভিযোগ
তাড়াশে শিক্ষার্থীদের জুতা দিয়ে পেটানোর অভিযোগ প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে
সিরাজগঞ্জে ৪ হাজার পিচ ইয়াবাসহ আটক ২

আরও খবর

Android App