নিজস্ব প্রতিবেদক :
পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রæতগতিতে বাড়তে শুরু করেছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। দফায় দফায় বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের দেওয়া কৃষি প্রণোদনার ধানের চারাও তলিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি (১৩.৩৫ মিটার) যা বিদপসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং কাজিপুর পয়েন্টে (১৫.২৫ মিটার) যা বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরের সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রায় রোপা আমনসহ উঠতি ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে আশঙ্কাজনকহারে পানি বাড়তে থাকায় আবারও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে কৃষক। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে চরাঞ্চলের প্রায় ৮০ ভাগ রোপা আমন ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যমুনার পানি দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার আউশ এবং রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা হিসেবে বন্যাকবলিত ৭টি উপজেলার ১ হাজার ২ শত ৪৫ জন কৃষকের মাঝে বীজ দেওয়া হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ জানান, জেলার বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে ৫ হাজার কৃষকদের মাঝে ১ বিঘা করে মাস কালাই, ১ হাজার ২শত ৪৫ জন কৃষকের মাঝে রোপা আমন চারা ও ৮২ টি ইউনিয়নে ৩২ জন্য কৃষকের মাঝে সব্জি চারা বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ আবারও যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকের বীজতলা তলিয়ে গেছে। তবে আমরা প্রাকৃতিক এ দুর্যোগ মোকাবিলায় তৈরি রয়েছি বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, এ বছরের বন্যা দীর্ঘায়িত বন্যা। জুনের শুরু থেকে যমুনা নদীতে দ্রæতগতিতে পানি বাড়তে শুরু করে। আবারও নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।
তিনি আরও জানান, কাজীপুর উপজেলার পাটাগ্রাম ও শাহজাদপুর উপজেলার ব্রক্ষণগ্রাম থেকে কৈজুড়ী পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার বাঁধ অরক্ষিত রয়েছে। এখানে ভাঙন ছিল। ভাঙন রোধে ১১শ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনও হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রæত সময়ের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
এদিকে জেলায় আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতীরবর্তি এলাকাবাসীর মধ্যে অতংক বিরাজ করছে। বিশেষ করে কাজীপুর, এনায়েতপুর ও চৌহালীতে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে।