নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিরাজগঞ্জে নিহত ছাত্রনেতা এনামুল হক বিজয় স্মরণে মিলাদ মাহফিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি ২টি মামলা হয়েছে।
মামলায় নামীয় ও অজ্ঞাত মিলে ২৮০ জনকে আসামী করা হয়েছে। ঘটনার পর আটক ১২ জনকে এ দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বিকেলে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় সামনে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ধীরে ধীরে তা পুরো এসএস রোডে ছড়িয়ে পড়ে। টানা দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে উভয়গ্রুপে অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরাও যুক্ত হন।
সদর থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, সংঘর্ষের ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করা হয়। এরা দায়ের হওয়া ২টি মামলার এজাহারনামীয় এবং সন্দেহভাজন আসামী। বুধবার বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ওসি আরো জানান, এরআগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবীব খোকা বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ্য ও ৩০/৩৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে এবং জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ বাদী হয়ে ৭০ জনের নাম উল্লেখ্য ও ১৩০/১৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামীর নামে মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একডালা পূর্নবাসন এলাকার রুবেল হোসেন রনি, আলম সেখ, ফরিদ সেখ, শরিফ ও রেলওয়ে কলোনী ২ সহোদর সানোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেনকে ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবীব খোকার দায়ের করা মামলায় এবং দত্তবাড়ি মহল্লার জাফরুল ইসলাম রকি, দিয়ারধানগড়ার সালমান, মাহমুদপুর মহল্লার মিন্টু সেখ, শওকত আলী এবং কোলগয়লা মহল্লার ২ সহোদর রনি ও জনিকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবীব খোকার দায়ের করা মামলার শীর্ষ পর্যায়ের আসামীরা হলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর সেলিম আহম্মেদ, তার ভাই পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাকিল আহম্মেদ, তার ভাই সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পীর সুমন, যুবলীগ নেতা দত্তবাড়ির আবু মুসা ও মো: হোসেন প্রমুখ।
অপরদিকে, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদের দায়ের করা মামলার শীর্ষ পর্যায়ের আসামীরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিম রেজা নুর দিপু, সয়দাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নবীদুল ইসলাম, শহর যুবলীগের আহবায়ক এমদাদুল হক এমদাদ, ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি টি এম রিজভী ও শহর ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল মতিন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বিকেলে জাতীয় নেতা প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে ছাত্রলীগ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে যাওয়ার পথে শহরের বাজার ষ্টেশন এলাকায় এনামুল হক বিজয়কে মাথায় কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। ৯ দিন লাইভ সাপোর্টে থাকার পর ৫ জুলাই সকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে ২৭ জুন জেলা ছাত্রলীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সংগঠনের ৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর ২৮ জুন মামলার আসামী জেলা ছাত্রলীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন ও শিহাব আহমেদ জিহাদকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। নিহত এনামুল জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও কামারখন্দ সরকারী হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন।