নিজস্ব প্রতিবেদক :
উজানের পাহাড়ী ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দ্রুতগতিতে পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলে অনেক বাড়ীঘর এবং শত শত ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
রবিবার (২৮জুন) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘন্টায় ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনার পানি আগামী ৩দিন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এদিকে যমুনার পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের করতোয়া ও বড়ালসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বেড়েই চলেছে। যমুনা নদী অধ্যুষিত জেলার কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার প্রায় ৩০ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে এসব উপজেলার চরাঞ্চলের নি¤œঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন ফসল। জেলার ৫টি উপজেলার প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির আখ, পাট, তিল, বাদাম, সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এছাড়া চরাঞ্চলসহ নদী তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন।
অপরদিকে, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাদাই সুইজ গেট ও খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের গুনেগাঁতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরাতন বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে যমুনা নদীর পানি প্রবেশ করে গুনেগাঁতি গ্রাম ও পৌরসভার নিম্নাঞ্চল রাণী গ্রামের বাড়ি-ঘরে পানি উঠায় মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছে। পৌরসভার রাণীগ্রামে যমুনা নদীর পানি প্রবেশ করায় এই এলাকার লোকজন নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় চলাচল করছে। বানভাসি মানুষেরা পরিবার পরিজন, গৃহস্থালি জিনিষপত্র ও গবাদি পশু নিয়ে সরকারী স্কুলে আশ্রয় নিচ্ছে এবং অনেকেই অন্যত্র নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের গুণেরগাঁতি থেকে ভাটিয়ারী পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরাতন বাঁধটি বহু আগেই ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় নতুন বাঁধ নির্মান করা হয়। গুণেরগাঁতি ও রাণীগ্রামের কিছু অংশ ভেঙ্গে যাওয়া পুরাতন বাঁধ ও নতুন বাঁধের মাঝখানে পড়ে যায়। ঐ এলাকার লোকজন অন্যত্র চলে না যাওয়ায় বন্যার সময় তাদেরকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড যমুনা নদী খনন করে ঐ এলাকায় ক্রসবাঁধ নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুল ইসলাম জানান, টানা বৃষ্টিতে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় ৩০টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোর এক হাজার ৫৯ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নি¤œজীত হয়েছে। এতে বেশিরভাগ ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে।