নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে জেলা আওয়ামীলীগ, সহযোগী সংগঠন, সিরাজগঞ্জ জেলার সাধারণ মানুষের চাপা কান্না ও চোখের জলে ভাসছে সিরাজগঞ্জ জেলা। নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সব মহলেই চলছে আবেগঘন কথা। পুরো জেলাতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অতি সকজেই সাধারণ মানুষকে আপন করে নিতেন তিনি। তার এই ভালবাসা চিরতরে হারালেন সিরাজগঞ্জ বাসী। প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে বের হচ্ছে তার গুনাবলী ও ভালবাসার কথা। সিরাজগঞ্জ বাসীর হৃদয়ে চির অমর হয়ে থাকবে মোহাম্মদ নাসিমের নাম।
জেলার উন্নয়নের একমাত্র চাবিকাঠি ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। এমপি ও মন্ত্রী থাকাকালীন নিজ এলাকা ও জেলার উন্নয়ন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলার উন্নয়নে তার হাতের ছোঁয়া আছে। অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াও এসব অঞ্চলের মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চাকরি দিয়ে এলাকার মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ছাত্ররাজনীতি ছাড়ার পরে যুবলীগের রাজনীতি করলেও ১৯৮১ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলীর সস্তান মোহাম্মদ নাসিম। ওই সম্মেলনে প্রথমবারের মতো তিনি আওয়ামীলীগের যুব সম্পাদক নির্বাচিত হন।
বাবা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল হওয়ার কারণে কারাগারে প্রাণ দিতে হলো ঘাতকের বুলেটে। আর সন্তান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আস্থাভাজন। ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। বিভিন্ন আন্দোলনে রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পিতার মতো তিনিও দেশের রাজনীতিতে একজন উজ্জল নক্ষত্র।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জিহাদ আল ইসলাম বলেন, আমাদের অভিভাবক প্রিয় নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে জেলায় ৭দিন ব্যাপী শোক ঘোষনা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু নেতাকে সিরাজগঞ্জ আনা হচ্ছেনা। সেইহেতু জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকায় জানাযায় অংশগ্রহন করব।
শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. দানিউল হক মোল্লা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমরা সিরাজগঞ্জ বাসী তথা উত্তরবঙ্গবাসী হারালাম আমাদের প্রাণ প্রিয় নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে। আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক ছিলেন। তিনি চলে যাওয়ায় আমরা মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়লাম।
এর আগে জ্বর ও কাশির মত উপসর্গ নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। পরীক্ষায় তার দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় গত ৫ জুন সকালে তার ব্রেইন স্ট্রোক হলে সেখানেই তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা নাসিমের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে গেলে ১৩ সদস্যের এই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। পরে নাসিমকে নেয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। এরপর দুই দফা তার করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ এলেও লাইফ সাপোর্ট সরানো সম্ভব হয়নি।