চৌহালী সংবাদদাতা :
সিরাজগঞ্জের চৌহালীর উপজেলার দুর্গম চরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে যমুনা নদীতে ঝাপ দিয়ে ডুবে এক জুয়ারীর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত এন্তাজ আলী (৪২) পাশ্ববর্তী শাহজাদপুর উপজেলার ভাটদিঘুলিয়া গ্রামের দুগন মিয়ার ছেলে। তার লাশ যমুনার হাটঘোরজান এলাকা থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেছে। এদিকে অভিযান চলাকালে পুলিশের হাতে আটক জুয়ারী ইউপি সদস্য রাব্বি মিয়া সহ ৩ জনকে টাকার বিনিময়ে ঘটনাস্থল থেকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৌহালীর দুর্গম যমুনার চরে জুয়ার রমরমা আসর চলমান করোনাতেও থেমে নেই। পুলিশকে ম্যানেজ করে উপজেলার ঘোরজান সোলার প্যানেল অফিসের পাশে যমুনার চরে প্রতিদিনই জুয়ার অবৈধ আসর বসছে। স্থানীয় আব্দুস সালাম ব্যাপারীর নেতৃত্বে দুরদুরান্ত থেকে আগত জুয়ারীরা প্রতিদিন সেখানে জুয়া খেলছে। লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলার পাশাপাশি মাদকের রমরমা বেচাকেনায় যুবকসমাজ বিপথগামী হবার আশঙ্কায় অতিষ্ট এলাকাবাসি। এদিকে, জুয়ার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে পুলিশের সাথে বনিবনা না হওয়ায় সম্প্রতি দ্বন্ধ শুরু হয়। এরই জের ধরে চৌহালী থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মামুনের নেতৃত্বে মঙ্গলবার সেখানে অভিযান চলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়ারী এন্তাজ আলী সহ সবাই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য রাব্বি মিয়া, জুয়ারী আবু সিদ্দিক ও আমির হোসেনকে অভিযানে আটক হন। এন্তাজ যমুনায় ঝাপ দিয়ে সাঁতরিয়ে মাঝ চরে উঠার চেষ্টা করে। পুলিশও নৌকা নিয়ে তাকে ধাওয়া করলে ভয়ে সে নদীর স্্েরাতে তলিয়ে যায়। তখন অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ টাকার বিনিময়ে আটক ইউপি সদস্য সহ ৩ জুয়ারীকে ছেড়ে দিয়ে দ্রুত নৌকা নিয়ে চলে যায়। রাতে হাট ঘোরজান এলাকায় যমুনায় এন্তাজ আলীর লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে। এরপর পুলিশের মাধ্যমে নিজ বাড়িতে স্বজনেরা লাশ নিয়ে চলে যায়।
কৈজুরী ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বুধবার দুপুরে বলেন, জুয়া খেলতে গিয়ে চৌহালী থানা পুলিশের তাড়া খেয়ে এন্তাজ লাফ দেন যমুনায়। পরে পুলিশ লাশ পেয়ে স্বজনদের হস্তান্তর করেছে। লাশ হস্তান্তরের সময় চৌহালীর এসআই তৈয়ব আলী, আমার মেম্বর শহিদুল ও নিহতের ভাই দেলবার আলী মন্ডলও ছিলেন। বাদ যোহর ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন হয়েছে। চৌহালী থানার উপ-পরিদর্শক তৈয়ব আলী এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
অভিযুক্ত এসআই মাসুদকেও পাওয়া যায়নি। চৌহালীর ওসি রাশেদুল ইসলাম বিশ্বাস জুয়ার ভাগাটোয়ারা ও পুলিশের নিয়মিত মাসোয়ারা গ্রহনের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে চেয়ারম্যানের বক্তব্য মোটেই সত্য নয়। আমি ঘটনাটি তদন্ত করতে মাঠে নেমেছি।